Advertisement

এশিয়ার সেরা ভারত বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন

‘এশিয়াসেরা’ ভারত!চিনের পরে দক্ষিন কোরিয়ার ওপর স্টিমরোলার চালিয়ে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের তাজ ভারতের মাথায়। শনিবার চিনের বিরুদ্ধে যেখানে শেষ করেছিল দক্ষিন কোরিয়ার বিরুদ্ধে ঠিক যেন সেখান থেকে শুরু করেছিলেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। ফল গত বারের চ‌্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়ার আত্মসমর্পণ । এশিয়া কাপ হকির ফাইনালে ৪-১ গোলে জয় ভারতকে হকি বিশ্বকাপেরও সরাসরি টিকিট নিয়ে এসে দিল।এবার চোখ এশিয়ান গেমসের সোনা,যা লস অ্যাঞ্জেলসের টিকিট নিয়ে এসে দেবে। রবিবারের চার গোলে জোড়া গোল দিলপ্রীত সিংহর। বাকি দুই সুখজিৎ সিংহ ও অমিত রোহিদাসের। আট বছর পরে এশিয়া সেরার খেতাব ফিরল দেশে। এশীয় সেরা হওয়ার লড়াইয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল। ভারতীয় হকির সাম্প্রতিক অতীতের জোড়া পোস্টার বয় হরমনপ্রীত এবং হার্দিক সিংহ ছাড়াও বেশ কিছু নাম সামনে এসেছে। সুখজিৎ সিংহ, দিলপ্রীত সিংহ, শিলানন্দ লাকরারা এখন সমানভাবে পাদপ্রদীপে। টুর্নামেন্ট জুড়ে নির্ভরতা দিল ভারতের রক্ষণ। দক্ষিন কোরিয়ার বিরুদ্ধে সুপার ফোরে দু’গোল হজম করেছিল ভারত। শনিবারে পরে রবিবারও অপ্রতিরোধ্য ভারতীয় রক্ষন। চিনের বিরুদ্ধে গোলরক্ষক কৃষ্ণ বাহাদুর পাঠক দূর্লঘ্ন ছিলেন। রবিবার মাত্র একটি গোল হজম করেছে ভারত। অর্থাৎ রক্ষণ নিয়ে আপাতত চিন্তা কেটেছে ভারতের কোচ ক্রেগ ফুলটনের।সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক অবশ‌্য অপরাজিত থেকে চ‌্যাম্পিয়ন হওয়া। এই নিয়ে চার বার এশিয়া কাপ জিতল ভারত। প্রথম জয় এসেছিল ২০০৩ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ২০০৭ সালে কোরিয়াকে হারিয়েই জয় এসেছিল ৭-২ ফলে। তৃতীয় বার ২০১৭ সালে মালয়েশিয়াকে হারায় ভারত।ণরবিবার অবশ‌্য ভারতের হয়ে অনুঘটকের হয়ে কাজ করে দর্শক সমর্থন। শুরু থেকেই গোটা স্টেডিয়াম ‘ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া’ ধ্বনিতে মাতোয়ারা। সেই দর্শকদের উল্লাস স্থায়ী করতে বেশি সময় লাগেনি সুখজিতদের। ৩১ সেকেন্ডের মধ‌্যে কোরিয়ার বৃত্তের মধ‌্যে হরমনপ্রীত সিংহের বাড়ানো বল আচমকা পেয়ে যান সুখজিৎ। জোরালো রিভার্স হিটে ভারতকে তিনি ১-০ এগিয়ে দেন। প্রথমে গোলের পরে মুহুর্মুহু আক্রমণ শানাতে থাকে ভারত। গোটা দলই তখন উঠে এসেছে কোরিয়ার অর্ধে। আট মিনিটের মাথায় দলের দ্বিতীয় গোল প্রায় করে ফেলছিলেন দিলপ্রীত, কিন্তু সেই বল আটকে দেন কোরিয়ার গোলরক্ষক জেহান কিম। নয় মিনিটের মাথায় পেনাল্টি স্ট্রোকের সুযোগ আসে ভারতের। সদ্ব‌্যবহার করতে পারেননি যুগরাজ সিংহ।দ্বিতীয় কোয়ার্টারে রক্ষণ মজবুত করে ফেলে দক্ষিণ কোরিয়া। একেবারে শেষ দিকে হরমনপ্রীত সিংহের বাড়ানো লম্বা বল বাঁ প্রান্তে ধরেন সঞ্জয়। তিনি সেই বল বাড়িয়ে দেন ডি এর মধ‌্যে থাকা দিলপ্রীতকে। গোল করতে তিনি ভুল করেননি। ভারত ২-০। বিরতিতে ম্যাচ পরিসংখ‌্যান দেখাচ্ছিল- ভারতের একাধিপত্যের ছবি। ভারতের বৃত্তে দক্ষিন কোরিয়া মাত্র দু’বার প্রবেশ করতে পেরেছিল। অন‌্য দিকে ভারত দু’টি গোল সহ ১০ বার প্রতিপক্ষের বৃত্তের মধ‌্যে প্রবেশ করেছে। এই দাপট থেকেই ম‌্যাচের ভবিষ‌্যৎ প্রায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তৃতীয় কোয়ার্টারে ফের ভারতীয় দাপট। পাঁচ মিনিটের মধ‌্যে ৩-০ প্রায় করে ফেলেছিল ভারত। বৃত্তের মধ‌্যে থেকে অভিষেকের শট বাঁচান কোরিয়ার গোলরক্ষক। ফিরতি বল দিলপ্রীত জালে জড়ালেও তা বাতিল করে দেন আম্পায়র। ৪৪ মিনিটে অধিনায়ক হরমনপ্রীত ২৩ গজ দূর থেকে পাস দেন বৃত্তের মধ‌্যে থাকা রাজকুমার পালকে। তিনি পাস দেন দিলপ্রীতকে। ৩-০ করেন দিলপ্রীত।চতুর্থ কোয়ার্টারেও মাঠ জুড়ে শুধুই ভারত। শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ‌্যে পোনাল্টি কর্নার আদায় করে নেয় ভারত। শট নেওয়ার জন‌্য তৈরি হয়ে ছিলেন হরমনপ্রীত। কিন্তু সেই বল যায় পাশে দাঁড়ানো অমিত রোহিদাসের কাছে। কোরিয়ার খেলোয়াড়রা হরমনপ্রীতের দিকে দৌড়ে যাওয়ার সময় জোরালো মাটিঘেঁষা শট নেন অমিত। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৪-০ হয়ে যায়।পরের মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে একমাত্র সান্ত্বনাসূচক গোলটি করেন কোরিয়ার সন। প্যারিস অলিম্পিকের পরে এশীয় সেরার মুকুট। ভারতীয় হকি দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে সোনালি অতীতের প্রত্যাবর্তনের আশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *