কুশল চক্রবর্তী:
এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন জানিয়ে দিল মোহনবাগান আর এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করছে না। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লীগ ২তে কলকাতার মোহনবাগানের সুপার জায়েন্টের ৩০শে সেপ্টেম্বর খেলা পড়েছিল ইরানের সেপাহান এফ সির সাথে। নিরাপত্তা ও তাদের বিদেশী খেলোয়াড়দের ভিসা সমস্যার কথা জানিয়ে তারা কোর্ট অফ অ্যাডমিনিস্ত্রেশান অফ স্পোর্টসকে চিঠি দিয়ে আবেদন করে মোহন বাগান সুপার জায়েন্টের পক্ষে ইরানের ইস্ফাহানে তাদের দল পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।কিন্তু এএফসি এই ব্যপারটাকে মোহনবাগানের না খেলার ইচ্ছা প্রকাশ বলে ধরে। তার জন্য এএফসি জানিয়ে দিল যে মোহনবাগান আর এই প্রতিযোগিতায় খেলতে ইচ্ছুক নয়।অথবা মোহন বাগান সুপার জায়েন্ট এই প্রতিযোগিতা থেকেই সরে দাঁড়াতে চায়। অতএব আগের ম্যাচে তুর্কমেনিস্থানের আহাল এফ কের কাছে হারটাও মুছে গেল। গতবারও মোহনবাগান ট্র্যাক্টর এফ সি সাথে নিরাপত্তা জনিত কারনে ইরানের তাব্রিজে খেলতে না চাওয়ায় এ সি এল ২ থেকে নাম কাটা গিয়েছিল। প্রতি বছর আই এস এলের দল বানানর সময় মোহনবাগান সুপের জায়েন্ট কর্ত্রী পক্ষ দাবি করেন তারা নাকি শুধু ভারতের মাটিতে শ্রেষ্ঠত্বর জন্য দল বানান না। তাদের দল যেন এশিয়ার মাটিতেও নাম করবে,এই লক্ষ নিয়েই তারাদল গঠন করেন।।কিন্তু পর পর দুবার দেখা গেল যে, ফুটবলে ভারত সেরা হয়েও তারা এ সি এল২ থেকে অদ্ভুতভাবে সরে দাঁড়াল। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে ভারত থেকে যে সব দল এশিয়ার বিভিন্ন লেভেলের প্রতিযোগিতা খেলছে তাতে মোহনবাগান পিছিয়েই আছে। কিন্তু প্রতিযোগিতার মাঝপথে সরে দাঁড়ানো, তা বোধহয় মোহনবাগানের মত ভারতের কোনও দল আগে করেনি।এটা ঠিক মোহনবাগানের অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় ডিমিত্রি পেত্রাতস,জেমি মাক্লারেন,জেসন কামিংসের কিছু অসুবিধা ছিল ইরানে যাওয়ার ব্যপারে। এমনকি টম অলরেড স্কটল্যান্ডের লোক হওয়ায় উনারও কিছু অসুবিধা হয়ত ছিল ইরানে যাওয়ার ব্যপারে।কিন্তু এমন অসুবিধা স্বত্বেও দেখুন ২০১২ সালে ইস্টবেঙ্গলের খেলা পড়েছিল ইরানের আরবিলের সাথে। তারা তাদের অস্ট্রেলিয়ান কোচ ট্রেভার মরগান আর সেরা গোল করার লোক টলগে ওজবে কে বাদ দিয়েই ইস্টবেঙ্গল দল ইরানে খেলতে গিয়েছিল। এমনকি ২০২৩-২৪ এর এই এসিএল প্রতিযোগিতায় মুম্বাই এফ সি ইরানের নাশাজি মাযানদারানের সাথে খেলতে তেহেরানের মাঠে নামিয়েছিল বিদেশী বিহীন একাদশ।তাদের দৃষ্টিতে এর কারন ছিল প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আর পারলে দেখানো যে ভারতীয়রাও ফুটবল খলতে পারে।আবার দেখুন মোহনবাগান ১৯৯৯-২০০০ সালে জাপানের জুবিলি আওয়াতারসাথে খেলতে গিয়ে জাপানের মাটিতে ৮-০ হেরেছিল। তারপর তারা ওই দলটাকেভারতের মাটিতে মুখোমুখি যাতে না হতে হয় তার জন্য নানা কাজ করেছিল। ফল হল এই যে তাদের তো ৩০০০ ডলার ফাইন দিতে হয়েছিল, সঙ্গে ছিল তিন বছরের জন্য মোহনবাগানের উপর কোনও এশিয়ান লেভেল প্রতিযোগিতা না খেলতে পাড়ার শাস্তি।এমনকি দু বছরের জন্য এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেসান ভারতীয় কোনও ক্লাবকে আর এশিয়ান পর্যায়ের কোনও ক্লাব লেভেল প্রতিযোগিতা খেলতে দেয়নি। পর পর দুবার মোহনবাগানের ইরানে খেলতে না যাওয়ার ব্যপারটা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারসান যে ভালো ভাবে নেবে না তা তো বলাই বাহুল্য। তবে এই ব্যপারটা এ এফ সি এখন তাদের যে কমিটি, কোনও দল না খেললে সেই দলের বিপক্ষে ব্যবস্থা নেয়, সেই কমিটির কাছে পাঠিয়েছে । কিন্তু কোনও প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যপারে এ এফ সি কয়েকদিন আগে নেপালের ফুটবল সংস্থাকে ১০০০০ডলার ফাইন করেছে।আশা করা যায় মোহনবাগান সুপের জায়েন্টও এর থেকে বাদ যাবে না।কিন্তু চিন্তা হচ্ছে এই যে মোহনবাগানের এই যে ইরানের মাটিতে খেলতে না যাওয়া, তার ফলে যদি ভারতীয় অন্য কোনও ক্লাবকে আগামী দিনে এশিয়ান পর্যায়ের কোনও প্রতিযোগিতামুলক খেলায় খেলতে না দেওয়া হয়, তার দায় কি মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট নেবে ?
















Leave a Reply