বাইশ বছর পরেও আইএফএ শিল্ডের রং সবুজ মেরুন। শনিবারের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্টবেঙ্গল এফসিকে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়ে শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট। নির্ধারিত সময়ের পরেও অতিরিক্ত সময়ও খেলার ফল ছিল ১-১। টাইব্রেকারে জয় গুপ্তার শট বাঁচিয়ে নায়ক বিশাল কাইথ। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে গোল মিগুয়েল,সিবিলে,মহেশ এবং হিরোশি। মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের হয়ে টাইব্রেকারে গোল রবসন,মনবীর,লিস্টন কোলাসো,পেত্রাতোস এবং মেহতাব সিংয়র। বিতর্কের অন্ধকার সরিয়ে চলতি মরসুমে ট্রফির আলো বাগানে। একুশতম শিল্ড জিতল সবুজ মেরুন। আলোর উৎসবের প্রাক্কালে ধনতেরাসের সন্ধ্যায় “ট্রফিতেরাস” মোহনবাগান সুপারজায়ান্টে। অভিমান ভুলে সবুজ মেরুন সমর্থকরা ফের ব্যানার ঝোলালেন গ্যালারিতে। নির্ধারিত সময় এক এক গোলে শেষ হওয়ার পরে অতিরিক্ত সময়ের আধঘণ্টাতেও স্কোরবোর্ডে বদল হয়নি। ফলে টাইব্রেকারে আইএফএ শিল্ডের ভাগ্য গড়ালো। বাইশবছর আগেও টাই ভেঙেই খেতাব নির্নয় হয়েছিল। এবারও দুই গোলরক্ষকের হাতে ট্রফির ভাগ্য। বিশাল কাইথ না শেষ মুহূর্তে প্রোভসুখন গিলের পরিবর্তে নামা দেবজিৎ মজুমদার কে হবেন তারকা। তার উত্তরের অপেক্ষায় ছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপস্থিত হাজার পঁয়তাল্লিশ দর্শক। শেষ পর্যন্ত বিশাল কাইথের বিশ্বস্ত হাতে আইএফএ শিল্ড এল সুপারজায়ান্টের ঘরে। প্রতিবাদ এবং উচ্ছ্বাসের মিশ্র আবহে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয়েছিল আইএফএ শিল্ড ফাইনাল। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা যখন দলের প্রতিটি আক্রমনে সরব উপস্থিতি জানান দিচ্ছে তখন বিপরীত ছবি মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট সমর্থকদের। টিফো প্ল্যাকার্ড নামিয়ে ইস্টবেঙ্গল যখন সরব তখন সবুজ মেরুন চুপ। ৩১ মিনিটে ম্যাকলারেনকে পিছন থেকে আনোয়ার ধাক্কা মারলে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট। কিন্তু তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ। অদ্ভুতভাবে পুরো স্টেডিয়াম কে বিস্মিত করে অনেক উঁচু দিয়ে বাইরে পাঠান। কামিন্সের পেনাল্টি নষ্ট জাগিয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গলকে। ৩৫ মিনিটে রশিদের পাস থেকে নওরেম মহেশ বল পেয়ে দৌড়ে ঢুকে নিচু পাস বাড়ালে তা জালে পাঠান হামিদ(১-০)। আলবার্তো গোল হওয়ার সময় নিছক দর্শক। অথচ শুরুর চাপ সামলে অন্তত দুবার গোলের মুখ প্রায় খুলে ফেলেছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টই। আট মিনিটে কামিন্সের পাস থেকে বল পেয়ে তা প্রোভসুখন গিলের বুকে মারেন ম্যাকলারেন। এরপর ফের সুযোগ নষ্ট সাহাল আব্দুল সামাদের। ৩৫ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার পরে ইস্টবেঙ্গল আরও দুটো সহজ সুযোগ নষ্ট করে। ফের রশিদের পাস থেকে বল পেয়ে মহেশ বাড়িয়ে দিলে পোস্টে মারেন হামিদ। এরপর আবার কার্যত ফাঁকা গোলে বল ঠেলার বদলে বাইরে মারেন হামিদ। প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময়ে সমতায় ফেরে মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট। বক্সের মধ্যে থেকে নেওয়া আপুইয়ার শট বারে লেগে গোল লাইনের পেছনে ড্রপ পড়লে গোল দেন রেফারি। (১-১)।আক্রমন প্রতিআক্রমনে উপভোগ্য ডার্বির দ্বিতীয়ার্ধ। প্রথমার্ধের জড়তা কাটিয়ে অস্কার ব্রুজো এবং হোসে মোলিনা অনেক বেশি ইতিবাচক এবং আক্রমনাত্মক ফুটবল খেলালেন। ফলে দুদলের রক্ষনই ব্যস্ত থাকল প্রতিপক্ষের আক্রমন থামাতে। হোসে মোলিনা নামালেন রবসন এবং দীপক টাঙরিকে। কামিন্স এবং অনিরুদ্ধ থাপার বদলে দুই পরিবর্তন। অস্কার ব্রুজো মিগুয়েলকে নামালেন সওল ক্রেসপোর জায়গায়। হামিদের বদলে হিরোসিকে নামানো ছাড়াও লালচুঙনুঙ্গার বদলে জয় গুপ্তাকে নামিয়ে ম্যাচ পকেটে পুরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হিরোশির একটি হেড এবং রশিদের একটি একক প্রচেষ্টা ছাড়া ইস্টবেঙ্গল গোলের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি। মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট গোলের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি। নির্ধারিত নব্বই মিনিট ১-১। ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে। শেষবার আইএফএ শিল্ড ফাইনালের ডার্বির ফলাফলও গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে।শিল্ড ফাইনালে মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের প্রাপ্ত ট্রফি। ইস্টবেঙ্গলের প্রাপ্ত চোখে চোখ রেখে লড়াই। যা হয়তো দুটো দলকে আসন্ন সুপার কাপে অক্সিজেন যোগাবে।
বাইশ বছর পরেও আইএফএ শিল্ডের রং সবুজ মেরুন।
















Leave a Reply