সুপার কাপের বোধনের দিনেই বোধহয় ইস্টবেঙ্গলের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেল। গোয়ায় সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ২-২ গোলে ড্র করে মাঠ ছাড়ার সঙ্গেই অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা সুপার কাপ থেকে বিদায় রাস্তায় কার্যত পা দিয়ে ফেলল। কারন পরবর্তী দুটো ম্যাচ চেন্নাইয়িন এফসি এবং মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের বিরুদ্ধে। সবুজ মেরুন ব্রিগেড যদি তাদের প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়িনকে বড় ব্যবধানে হারায় তাহলে ইস্টবেঙ্গলের কাজ আরও কঠিন হবে। দশবছর আগে শেষবার ইস্টবেঙ্গল মুখোমুখি হয়েছিল ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবের। সেদিনের ডেম্পো এখন অতীত। কিছু জুনিয়র ফুটবলারকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন সমীর নায়েক। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে কলকাতা লিগের ছোট ক্লাবের প্রতিআক্রমন নির্ভর ফুটবল নীতি আঁকড়ে পয়েন্ট কেড়ে নিল ডেম্পো। দুটো আক্রমন হেনে দুটো গোল করে ড্র করল ম্যাচ। অথচ শুরুটা দেখে মনে হয়নি ইস্টবেঙ্গল পয়েন্ট খোঁয়াতে পারে। প্রথম পঁচিশ মিনিট আক্রমনের ঢেউয়ে ডেম্পো কার্যত নিজেদের বক্সে বন্দী। পাঁচ বিদেশি নিয়ে একাদশ সাজিয়ে ছিলেন অস্কার ব্রুজো। প্রথমবার হিরোশি এবং হামিদ শুরু করলেন। বিপিন সিং এবং জয় গুপ্তা মহেশ নওরেম সিংয়ের একের পর এক আক্রমনে মনে হচ্ছিল গোলের ফ্লাডগেট খুলল বলে। অথচ বারে লেগে বল প্রতি হয়ে বল বাইরে যাওয়া ছাড়াও একাধিক সহজ সুযোগ নষ্টে সফল ডেম্পোর প্রতিআক্রমন নির্ভর ফুটবল নীতি। পঁচিশ মিনিটে প্রথমবার আক্রমন হানে ডেম্পো। সাতাশ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পায় তারা। পেডেনকরের ফ্রিকিক দেবজিত মজুমদার বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে ফাকা গোলে বল ঠেলে দেন মহম্মদ আলি। গোলরক্ষককে ফাউল করা হয়েছিল ধরে নিয়ে কেভিন সিবিলেরা দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। ফলে গোলকরার সময় কোনও বাধা পাননি মহম্মদ আলি। এরপর ফের আক্রমনের ঢেউ লাল হলুদের। কিন্তু গোলমুখে ব্যর্থতা। বিরতিতে মিগুয়েলকে নামান অস্কার। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই বক্সের বাইরে থেকে মিগুয়েলের নেওয়া শট ডেম্পো গোলরক্ষক চাপড়ে বাঁচালে তা জালে পাঠান মহেশ নওরেম সিং। শুরুতেই সমতায় ফেরায় মনে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের ব্যবধান বাড়ানো সময়ের অপেক্ষা। ৫৭ মিনিটে লালচুঙনুঙ্গার বাড়ানো বল ধরে মিগুয়েলের দুরুহ কোন থেকে নেওয়া জোরালো শটে ইস্টবেঙ্গল ২-১। ডেম্পো গোলরক্ষক ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের সোয়ার্ভিং শটের হদিশ পাননি। পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে এগিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি। ফের ম্যাচের দখল ইস্টবেঙ্গলের পায়ে। একই সঙ্গে গোল নষ্টের প্রদর্শনী চলতে থাকে। মিগুয়েলের শট কোনরকমে বাঁচান ডেম্পো গোলরক্ষক। মহেশের শট পোস্টে লেগে বাইরে যায়। প্রতিপক্ষের চাপ সামলে হঠাৎ করেই পাল্টা আক্রমনে আসে ডেম্পো। ম্যাচের বয়স তখন ৮৮ মিনিট। পরিবর্ত হিসেবে নামা লক্ষীমান রাও বাঁদিক থেকে বল নিয়ে ঢুকে বক্সের মাথা থেকে গড়ানো শটে দলকে সমতায় ফেরান। জয়ের দোরগোড়া থেকে ড্র এর আতঙ্ক। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ম্যাচ শেষ। একই সঙ্গে এই ড্রয়ের জন্য দেবজিৎ মজুমদারের দুটো ভুল এবং দাপট দেখিয়েও সুযোগ নষ্টের প্রদর্শনীতে ইস্টবেঙ্গল বিদায়ের সামনে পৌঁছে গেল।
ডেম্পোর বিরুদ্ধে ড্র করে সুপার কাপ থেকে বিদায়ের শঙ্কা ইস্টবেঙ্গলের
















Leave a Reply