মাঝ দুপুরে আঁধার নামল ইডেনে। ঘনায়মান ঘূর্নিঝড় মন্থার প্রভাবে বঙ্গের আকাশে হেমন্তেও মেঘের ঘনঘটা। ফলে দ্বিতীয় দিনেও নির্ধারিত সময়ের আগে খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হলেন আম্পায়াররা। পরপর দুদিন আলোর অভাবে খেলা বন্ধ। মোট ৪৬ ওভারের মত খেলা হল না দুদিনে। মন্দ আলোর উপখ্যান দেখে বাংলার কোচ লক্ষীরতন শুক্লার কপালে আশঙ্কার কালো মেঘ। কারন গত দুই বছরে বাংলার একাধিক ম্যাচ জয়ের পথে কাঁটা ছড়িয়েছে বৃষ্টি। বাংলার২৭৯ রানের জবাবে গুজরাট প্রথম ইনিংসে সাত উইকেটে ১০৭। ১৭২ রানে পিছিয়ে গুজরাট। ফলো অনের ভ্রুকুটি গুজরাটের আকাশে। বাকি দুদিনে আবহাওয়া বাধা হয়ে না দাঁড়ালে অন্তত তিন পয়েন্ট বাংলার ঝুলিতে আশা উচিত। অধিনায়ক হিংরাজিয়া ব্যক্তিগত ৪১ রানে এবং চিন্তন গাজা চার রানে অপরাজিত রয়েছেন। ম্যাচ পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে এসে শাহবাজ আহমেদ জানিয়েছেন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও অন্তত তিন পয়েন্ট পাওয়ার ব্যাপারে আশা করছেন। দ্বিতীয় দিন বাংলা সাত উইকেটে ২৪৪ রান নিয়ে খেলা শুরু করে ২৭৯ রানে শেষ হয়ে যায়। সুমন্ত গুপ্ত ৬৩ রানেই আউট হয়ে যান। পাঁচ রান যোগ করেই প্রিয়াজিৎ সিং জাদেজার বলে উরভিল প্যাটেলের হাতে ধরা পড়েন। আকাশদীপ সিং ২৯ রানে ফিরে যান আর্য দেশাইয়ের দুরন্ত ক্যাচে। মহম্মদ শামি আট রানে অপরাজিত থাকেন। ইডেনে আপাত ধীর গতির বাইশগজে বাংলার বোলাররা আগুন ঝরালেন। নেতৃত্বে অবশ্যই মহম্মদ শামি। ধীরে ধীরে শামি ছন্দে ফিরেছেন। গুজরাট ব্যাটিংকে ভাঙার কাজটা তিনিই শুরু করলেন। স্কোরবোর্ড বলছে শামি ১৪ওভারে ৩৪ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন। তার থেকেও শামির বোলিংয়ে পুরানো ছন্দ ফেরার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে। দলীপ ট্রফিতে খেলার পরে এবার রঞ্জি ট্রফিতে। জাতীয় নির্বাচকরা ইডেনে উপস্থিত রয়েছেন। তারাও শামিকে ছন্দে ফিরতে দেখে হয়তো নিশ্চিন্ত বোধ করবেন। নির্বাচক আর পি সিংয়ের সঙ্গে দিনের শেষে কথা বললেন শামি। যা না কি শুধুই সৌজন্য বিনিময়,জানিয়েছেন বাংলার তারকা পেসার। গুজরাট দিনের শেষে সাত উইেকেটে ১০৭। শামি,আকাশদীপের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পাশে নজর কাড়লেন শাহবাজ আহমেদ। পাঁচ মাস পরে প্রতিযোগিতা মূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন। বাংলার হয়ে শেষ খেলেছিলেন গত ডিসেম্বর মাসে। আইপিএলে গত মে মাসে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টের হয়ে তিনটি ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন। এগারো মাস পরে ফের বাংলার জার্সিতে ফিরে শাহবাজ চার শিকারে দিনের নায়ক। এগারো দশমিক তিন ওভার বল করে ১৭ রানে চার উইকেট নিয়েছেন। “আমি গত পাঁচ মাস খেলার মধ্যে ছিলাম না। গত একমাস ধরে শুধুই ব্যাটিং করেছি। বাংলা দলে ফিরে এসে এই ম্যাচে খেলব এমন ব্যাপার ছিল না। ভেবেছিলাম সাতদিন অনুশীলন করে পরের ম্যাচ থেকে নামব। কিন্তু কোচ লক্ষীরতন শুক্লা,অধিনায়ক ,শামি ভাইয়ের উৎসাহে ম্যাচে নেমেছি। ব্যাটার হিসেবে নেওয়া হলেও পরে আর সেসব মাথায় ছিল না। ব্যাট হাতে সফল হইনি। বল হাতে দলের প্রয়োজনে অংশ নিতে চেয়েছিলাম। চার উইকেটের মধ্যে উমঙ্গ কুমারের উইকেট টা টার্নিং পয়েন্ট। কারন ওই সময় গুজরাট থিতু হতে শুরু করেছিল,” বলেছেন শাহবাজ। ২৭৯ রান তাড়া করতে নেমে গুজরাট ফলো অনের লক্ষণরেখা থেকে এখনও ২২ রান দূরে। শাহবাজ বলছেন এই পিচে ব্যাটারদের ব্যাটিং করা সমস্যা হচ্ছে। যা বজায় থাকলে অন্তত তিন পয়েন্ট পাওয়া আশা করাই যেতে পারে। বাংলার বোলিং বিভাগের ভালো বোলিং গুজরাটকে পেছনের পায়ে ইতিমধ্যে ঠেলে দিয়েছে। তবে বৃষ্টির ভ্রুকুটিতে ফের পয়েন্ট হাতছাড়ার শঙ্কা দেখে ভাগ্যকে দুষছেন লক্ষীরতন শুক্লা। এর সঙ্গেই বাংলা শিবিরে দুঃসংবাদ সুদীপ চ্যাটার্জীর হাঁটুর চোট। এমআরআই করা হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
ছন্দে শামি,পাঁচ মাস পরে মাঠে ফিরে বাজিমাত শাহবাজের
















Leave a Reply