Advertisement

জেমাইমা-হরমনের ব্যাটে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত, সেমিতে অসিদের ৫ উইকেটে হারিয়ে রবিতে বিশ্বজয়ের অপেক্ষা

অসাধ্যসাধন করল ভারত। সাত বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে মহিলাদের বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেন হরমনপ্রীত কৌরেরা। নবি মুম্বইয়ের মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ৩৩৮ রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া। জেমাইমা রদ্রিগেজ়ের ১২৭ ও অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরের ৮৯ রানে ভর করে সেই রান তাড়া করে জিতল ভারত। এক দিনের ক্রিকেটে এটি ভারতের সর্বাধিক রান তাড়া করে জয়। রবিবার ফাইনালে ভারতের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ, এক দিনের বিশ্বকাপে এ বার পাওয়া যাবে এক নতুন চ্যাম্পিয়ন।
নবি মুম্বইয়ে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অ্যালিসা হিলি। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক চেয়েছিলেন, বড় রান বোর্ডে তুলতে। কিন্তু তিনি বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি। এক বার তাঁর সহজ ক্যাচ ছাড়েন হরমনপ্রীত। তার পরেও মাত্র ৫ রানে ক্রান্তি গৌড়ের বলে আউট হন হিলি। অপর ওপেনার ফিবি লিচফিল্ড প্রথম বল থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিলেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগান তিনি। লিচফিল্ডকে সঙ্গ দেন এলিস পেরি। দু’জনে মিলে দ্রুত রান করছিলেন। দুই ব্যাটারের মধ্যে ১৫৫ রানের জুটি হয়।

শতরান করে লিচফিল্ড। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তাঁর ঝোড়ো ইনিংস চাপ বাড়াচ্ছিল ভারতের উপর। সেই জুটি ভাঙেন আমনজ্যোৎ কৌর। ১১৯ রানের মাথায় লিচফিল্ডকে আউট করেন তিনি। সেই জুটি ভাঙার পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের স্পিনারেরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। হাত খুলতে না পেরে পর পর উইকেট পড়তে থাকে। পেরি করেন ৭৭ রান। বেথ মুনি ২৪ রানে আউট হন। অ্য়ানাবেল সাদারল্যান্ড (৩) ও তাহিলা ম্যাকগ্রা (১২) রান পাননি।
পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৮ রানে অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের বোলারদের মধ্যে শ্রী চরণী ও দীপ্তি শর্মা ২ করে উইকেট নেন। ১ করে উইকেট নেন ক্রান্তি, আমনজ্যোৎ ও রাধা যাদব।
৩৩৯ রান তাড়া করা সহজ ছিল না। বিশেষ করে যেখানে ফর্মে থাকা প্রতিকা রাওয়ালকে এই ম্যাচে পায়নি ভারত। হঠাৎ করে বিশ্বকাপের দলে ঢুকে ওপেন করতে নামতে হয় শেফালি বর্মাকে। ফলে দায়িত্ব বেশি ছিল স্মৃতি মন্ধানার। শেফালি দুটো চার মারলেও বেশি ক্ষণ টিকে থাকেননি। ১০ রান কিম গার্থের বলে আউট হন তিনি। মন্ধানা ভাল খেলছিলেন। কিন্তু ২৪ রানের মাথায় লেগ সাইডের বল মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। রিভিউ নেয় অস্ট্রেলিয়া। সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়।
মন্ধানা আউট হওয়ার পর মনে হচ্ছিল, আরও এক বার বিশ্বকাপ থেকে ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হবে ভারতকে। কিন্তু অন্য পরিকল্পনা ছিল জেমাইমা ও হরমনপ্রীতের। শুরুতে কয়েকটি ওভার ধরে খেলেন তাঁরা। ধীরে ধীরে হাত খোলা শুরু করেন। বেশি আক্রমণাত্মক দেখাচ্ছিল জেমাইমাকে। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে প্রতি ওভারে চার মারছিলেন তিনি। ফলে ২ উইকেট পড়লেও ভারতের রান তোলার গতি কমেনি।
অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের রান তোলার গতি প্রায় সমান ছিল। দুই ব্যাটারই শতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ৮৯ রানের মাথায় সাদারল্যান্ডের বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন হরমন। অধিনায়ক আউট হওয়ায় জেমাইমা ঠিক করে নেন, শেষ পর্যন্ত তিনি টিকে থাকবেন। সেটাই করলেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছিল জেমাইমা। রান পেয়ে বাদও পড়েছিলেন এক ম্যাচে। সেই জেমাইমা শতরান করে ভারতকে ফাইনালে তুললেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *