Advertisement

বাভুমার স্টেটিজিতে ইডেনে লজ্জার হার গম্ভীরের ভারতের

স্বখাত সলিলে ভরাডুবি ভারতের। ইডেনে দক্ষিন আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে লজ্জার হার গৌতম গম্ভীরের ভারতের। জয়ের জন্য ১২৪ রান তাড়া করতে নেমে ভারত অলআউট ৯৩ রানে। শুভমান গিলের চোট লাগা ঘাড়ের এমআরআই রিপোর্টে সবকিছুই স্বাভাবিক পাওয়া গিয়েছে। ব্যথা জনিত কোনও অস্বস্তি নেই। ভারত অধিনায়ক টিভিতে দলের খেলা দেখছেন। কিন্তু তাঁর মানসিক অবস্থার স্ক্যান করলে অন্য ছবি সামনে আসত। ১২৪রানের লক্ষ্য জয়ের জন্য তাড়া করতে নেমে ভারত ৯৩ রানে অলআউট। ৩০রানে পরাজিত ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু থেকেই ভারতীয় ব্যাটিং নড়বড়ে। শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। দলের রান স্কোরবোর্ডে ওঠার আগেই জশস্বী জয়সওয়াল(০) সাজঘরে। আরেক ওপেনার কেএল রাহুলও দ্রুত ফিরে গিয়েছেন। ব্যক্তিগত একরানে ফিরে যান। দুটো আউটেই বোলার জেনসেন এবং ক্যাচার উইকেটরক্ষক কেইল ভেরেনে। মধ্যাহ্নভোজের আগে ভারত দুই উইকেট অস্বস্তিতে। ব্যাট করছেন ধ্রুব জুরেল(৪) এবং ওয়াশিংটন সুন্দর(৫)। স্কোর তখন ১০। এরপর ভারতীয় ব্যাটারদের আসাযাওয়া। ওয়াশিংটনের ৩১এবং অক্ষর প্যাটেলের ২৬ ছাড়া দুই অঙ্কের রান ধ্রুব জুরেলের ১৩এবং রবীন্দ্র জাদেজার ১৮। বাকিরা ঘূর্নি জালে অসহায় আত্মসমর্পন। দক্ষিন আফ্রিকার সাইমন হারমার ১৪ওভারে ২১রানের বিনিময়ে চার উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল। জেনসেনর ঝুলিতে তিনটি এবং কেশব মহারাজের ঝুলিতে একটি উইকেট। নিউজিল্যাণ্ডের বিরুদ্ধে হোয়াইট ওয়াশের পরে ফের দক্ষিন আফ্রিকার বিরুদ্ধে হার দিয়ে সিরিজ শুরু ভারতের। অসমে সমতায় ফিরতে পারবে কি না ভারত সময় বলবে। তবে এই পরাজয়ের দায় গম্ভীর এবং কোম্পানিকে নিতে হবে। ডিজাইনার পিচ থেকে চাহিদার বায়নাক্কায় ঢেকে ক্রিকেটটাই ভুলে গিয়েছিল টিম ইণ্ডিয়া। লক্ষ্যহীন দলের দিগভ্রান্ত ক্রিকেটে পরাজয়ই যে ভবিতব্য তা বোধহয় ক্রিকেট দেবতা নিশ্চিত করে রেখেছিলেন। তেরো বছর পরে ইডেনে হারল ভারত। দক্ষিন আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৫বছর পরে হার। ছোট ইনিংস অনেক সময় গভীর অভিঘাত রেখে যায়। যার প্রভাব পড়ে সামগ্রিক ভাবে। ইডেন টেস্টে দক্ষিন আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ইনিংসটা অনেকটা সেইরকম। ইডেন পিচের দ্রুত চরিত্রগত অধঃপতন নিয়ে যখন ক্রিকেট বিশ্ব সমালোচনায় মগ্ন,দোষ ঠেলাঠেলি চলছে তখন ক্রিকেটের মনযোগী ছাত্রের মত রবিবার সকালে ব্যাটিং করে চলেছেন বাভুমা। প্রোটিয়া অধিনায়ক ক্রিকেট কুলের বড় ব্যাটসম্যানের তকমা পাননা। অথচ ইডেন প্রথম অর্ধ শতরানের স্বাদ পেল বাভুমার ব্যাট থেকেই। ২৯ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে বাভুমা অপরাজিত থাকলেন ৫৫ রানে। ১৩৬ বলে চারটে বাউণ্ডারিতে সাজানো ইনিংসের একটাই ট্যাগ লাইন “দাঁতচাপা লড়াই”। যার ব্যাখা কোনও বিশেষণে যথেষ্ট নয়। দক্ষিন আফ্রিকা ১৫৩ রানে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট। ১২৪ রান জয়ের লক্ষণরেখা। রবিবারের ইডেন উপভোগ্য লড়াইয়ের আশায়। অধিনায়কের পাশে করভিন বশ লড়লেন। সাত রান নয়ে দিন শুরু করে যশপ্রীত বুমরার বলে ২৫ রানে বোল্ড আউট হলেন। ব্যক্তিগতভাবে মূল্যবান ১৮ রান যোগ করে গেলেন। ইডেনে এতদিন চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে কম রান তাড়ার পরিসংখ্যান ছিল ১১৭। দ্বিতীয় দিনের শেষে মনে হয়েছিল ইডেনের “ভ্যাবচ্যাক” উইকেটে সেই পরিসংখ্যানে বদল হবে। কিন্তু বাভুমার নেতৃত্বে দক্ষিন আফ্রিকার নিচের সারির ব্যাটাররা লড়লেন। সাইমন হারমার ব্যক্তিগত সাত রানে ফেরেন মহম্মদ সিরাজের একটু নিচু হয়ে যাওয়া বলে। তৃতীয় দিনের ভাঙা উইকেটে ব্যাটারদের রানের পাশাপাশি কতগুলো বল খেললেন তা গুরুত্বপূর্ন। বশ সাইত্রিশটি বল খেললেন,হারমার কুড়িটি,কেশব মহারাজ দুটো বল খেলেছেন। প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের বেশি সময় খেলল দক্ষিন আফ্রিকা। যা ইডেনের এই বাইশগজের অবস্থা খারাপ করার পক্ষে যথেষ্ট।তাতেই পরাজয়ের চিত্রনাট্য রচিত হয়ে গিয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *