এবার মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের মূল প্রবেশদ্বারে পড়ল সমর্থকদের ক্ষোভ সম্বলিত পোস্টার। মাঝরাতের অন্ধকারে এই পোস্টার ঝুলিয়ে দিয়ে গিয়েছেন সমর্থকরা। বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহনের ব্যাপারে সবুজ মেরুন ফুটবল ম্যানেজমেন্টের টানাপোড়েনের ফলেই বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা। পোস্টার টাঙালেন ক্লাবের গেটে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে যাওয়ার জন্য শনিবার সন্ধ্যায় বিমান ধরার কথা ছিল। বদলে প্র্যাকটিস ডেকেছেন কোচ হোসে মোলিনা। রবিবার সকালে চার্টাড ফ্লাইটে যাওয়ার উপায় রয়েছে। কিন্তু সেই ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত নেই। তিরিশ সেপ্টেম্বর ইরানের সাফিয়ান এফসির সঙ্গে খেলা মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের। শুধু আর্ন্তজাতিক টুর্নামেন্ট নয় দেশীয় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার ব্যাপারেও মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট দ্বিধায়। আইএফএ শিল্ডে অংশ নেওয়া নিয়ে খেলতে ধোঁয়াশা রেখেই চলেছে মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। গত সোমবার আইএফএ-এর শিল্ড নিয়ে হওয়া মিটিং-এ ছিলেন না মোহনবাগানের কোনও প্রতিনিধি। এরপর থেকেই শুরু হয় আশঙ্কা। সবুজ-মেরুন কি খেলতে নামবে শিল্ড? জল্পনা চলছে। সবুজ-মেরুন সমর্থকরা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে। কিন্তু তারা যে ক্লাবের সিদ্ধান্তে খুশি নন তা বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে চলেছে। তাঁদের দাবি, মোহনবাগানের ইতিহাস জড়িত রয়েছে এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে। ফলে এখানে মোহনবাগানের খেলা উচিত। সবুজ-মেরুন সমর্থকদের তরফে আইএফএকে চিঠি দিয়ে শিল্ডের একটি স্লট খালি রাখার জন্য লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই অনুরোধ মেনে আইএফএ শনিবার দুপুর পর্যন্ত সিদ্ধান্ত জানানোর সময় বাড়িয়েছে। সে দিনই ঘোষণা হবে শিল্ডের সূচি।আইএফএ শিল্ড ১৯১১ সালে জিতেছিল মোহনবাগান। ২৯ জুলাই সেই টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এই দিনটাকেই মোহনবাগান দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সে কথা উল্ল্যেখ করেই, মোহনবাগান সমর্থকদের সংগঠন মেরিনার্স বেস ক্যাম্পের আর্জি মোহনবাগান টিম ম্যানেজমেন্টকে আরও একটু সময় দেওয়া হোক। কারণ বৃহস্পতিবারই শিল্ডের জন্য নাম দেওয়ার শেষ দিন ধার্য করেছে বাংলা ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা। মেরিনার্স বেস ক্যাম্পের দাবি, শিল্ড খেলতে হবে মোহনবাগানকে। এদিকে ইরানে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২ এর অ্যাওয়ে ম্যাচ সবুজ মেরুন ব্রিগেডে বিদেশি ফুটবলাররা খেলতে যেতে পারবেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। প্রতিপক্ষ সোফিয়ান এফসি এই ম্যাচের আয়োজক। তারা মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের ফুটবলারদের সকলের ভিসা মঞ্জুর করিয়েছে। কিন্তু মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলারদের ইরানে পা দেওয়া তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ওপর দাঁড়িয়ে। কারন ইরানে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেই তাদের দেশের কোনও ফুটবলার পা দিলে তার দায় নেবে না। তাই মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের অজি ফুটবলাররা দ্বিধায়। ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছে মোহনবাগানকে। এরপর এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-তেও প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে হারতে হয়েছে সবুজ-মেরুনকে। ফলে একের পর এক ম্যাচ হেরে যাওয়া এবং কোচ হোসে মলিনার অদ্ভুত স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ক্ষুব্ধ সমর্থকরা। শুধু তাই নয়, পরপর দুটো কলকাতা লিগ ট্রফি যখন ইস্টবেঙ্গল জিতছে, তখনও মোহনবাগান ব্যর্থ। আবার মেয়েদের দল না থাকায়, সেক্ষেত্রেও ইস্টবেঙ্গল টেক্কা দিচ্ছে মোহনবাগানকে। এই অবস্থায় আইএফএ শিল্ডে না অংশ নিলে,ইরানে জয় ছিনিয়ে না নিয়ে আসতে পারলে সবুজ মেরুন সমর্থকদের চাপ বাড়বে। ফলে একের পর এক সমস্যা নিয়ে জেরবার ক্লাবের সমর্থকরা। এখন আইএফএ কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার। অন্যদিকে রাজ্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থাও চাপে। কারণ, এই শিল্ড খেলবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে ডায়মন্ড হারবার এফসি। ডায়মন্ড হারবার বর্তমানে বেশ ভালভাবেই উঠে আসছে। ইস্টবেঙ্গলকে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেলেও ফাইনালে নর্থ ইস্টের কাছে হারতে হয় তাদের।
মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের মূল প্রবেশদ্বারে পড়ল সমর্থকদের ক্ষোভ সম্বলিত পোস্টার
















Leave a Reply