Advertisement

গত তিন দিনের পারফরম্যান্সের চড়াই উতড়াই সরিয়ে জয়ের আলোয় বাংলা।

গত তিন দিনের পারফরম্যান্সের চড়াই উতড়াই সরিয়ে জয়ের আলোয় বাংলা। আলোর উৎসবের প্রাক্কালে জয়ের রোশনাই। ইডেনে উত্তরাখণ্ডকে উইকেটে হারালো লক্ষীরতন শুক্লার ছেলেরা। ফলে ছয় পয়েন্ট নিয়ে রঞ্জি ট্রফি জয়ের যাত্রা শুরু করল তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের জাত চিনিয়ে দিলেন মহম্মদ শামি। জাত চেনালো বাংলার প্রতিটি ক্রিকেটার। দুই উইকেটে ১৬৫ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে উত্তরাখন্ড ২৬৫ রানে ভেঙে পড়ে। শেষ দিনে শামিকে বল হাতে যেন এক অন্য রূপে দেখা গেল। নিখুঁত লাইন ও লেংথ, ধারালো সিম মুভমেন্ট, আর অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রন ! প্রতিটি স্পেলে উত্তরাখণ্ডের ব্যাটারদের নিঃশেষ করে দিয়েছেন। অভিজ্ঞতার জোরে ম্যাচের রং পাল্টে দিলেন একাই। বাংলার পেস অ্যাটাকে শামি ছিলেন অনুপ্রেরণার প্রতীক। ২৪.৪ ওভারে মাত্র ৩৮ রানে ৪ উইকেট পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে তাঁর প্রভাব কতটা বিশাল ছিল।তাঁর আগুনে স্পেলে দলে নতুন উদ্যম ফিরেছে ! আকাশদীপ, ঈশান, সুরজরা যোগ্য সহায়তা করেছে। প্রথম ইনিংসে তিন উইকেটের পরে দ্বিতীয় ইনিংসে চার শিকার। শামি প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে সাত উইকেট নিয়ে বোঝালেন তাঁকে নিয়ে শেষ কথা বলার দিন এখনও আসেনি। প্রথম ইনিংসে একটিও উইকেট না পাওয়া আকাশদীপের ঝুলিতেও দুই উইকেট। প্রথম ইনিংসে বাংলার বোলিংয়ের দুই অন্যতম স্তম্ভ ঈশান পোড়েল দুটো,সূরজ সিন্ধু জয়সওয়াল এবং ভিশাল ভাটি একটি করে উইকেট পেয়েছে। উত্তরাখণ্ডের ব্যাটারদের মধ্যে প্রশান্ত চোপড়া ৮২ রান এবং কুনাল চাণ্ডিলা ৭২ রান করে সবচেয়ে সফল। ভূপেন লালওয়ানি(২২) এবং যুবরাজ চৌধুরি(৩৫),অভয় নেগি(২৮) প্রয়োজনীয় সময়ে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ। শেষ দিনে মহম্মদ শামির নেতৃত্বাধীন বাংলার বোলিংয়ের সামনে কার্যত খড়কুটোর মত ভেসে যায় তারা। ১৭৩ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ার পরে বাকি উত্তরাখণ্ডের সাত উইকেট হুড়মুড় করে পড়ে যায়। ২৬৫ রানে প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেওয়ায় বাংলার সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫৬ রান। শেষ দিনের দুটি পর্বে তা তুলে নিতে মোটেই অসুবিধায় পড়তে হয়নি। তৃতীয় দিনের শেষে পিচ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল বাংলা। একই সঙ্গে জানিয়েছিল শেষ দিনের প্রথম পর্বে ভালো খেলতে পারলে ম্যাচ জয় সম্ভব। কোচ লক্ষ্মী রতন শুক্লার ছেলেরা জয়ের জন্যই সেই কাজটাই করে দেখালেন। আট উইকেটে জয়ী বাংলা। শেষ দিনে শামির আগুনে স্পেলই বাংলার জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল। ব্যাটাররা জয়ের দালান তৈরি করলেন। অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা সরিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে জ্বলে উঠলেন। তাঁর অপরাজিত ৮২বলে ছয় টি বাউণ্ডারিতে সাজানো ৭১ রান দলকে জয়ের পথে এগিয়ে দেয়। প্রথম ইনিংসে দুই রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করা সুদীপ চ্যাটার্জী করেন ১৬। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সুদীপ ঘরামি ৪৭ বলে পাঁচটি চার এবং একটি বিশাল ছক্কায় ৪৬ রান করলেও হাফ সেঞ্চুরির সুযোগ নষ্ট করেন। চার নম্বরে বিশাল ভাটি ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। এবার ঘরের মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ গুজরাট। লক্ষীরতন শুক্লা বলছেন দল প্রয়োজনীয় সময়ে জ্বলে উঠেছে। যা প্রমান করে দলের ক্ষমতা কতটা রয়েছে। ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে সুদীপ চ্যাটার্জী,সুদীপ্ত জ্বলে উঠেছিল। বল হাতে ঈশান,সূরজ শামি জ্বলে উঠেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে পুরো দল তো একসঙ্গে জ্বলে উঠল। তবে সবে শুরু। শুরুটা ভালো হল বলাই যায়। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। শামির পারফরম্যান্সই দেখিয়েছে কতটা তৈরি ও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *