বারবার চারবার ঘরের মাটিতে চেনা পরিবেশে প্রতিপক্ষ দলের কাছে আত্মসমর্পন। শেষ ছয়টির মধ্যে চারটিতে পরাজিত ভারতের। এখানে এসে নিউজিল্যাণ্ড,দক্ষিণ আফ্রিকা ঝামা ঘষে দিচ্ছে এই পরিস্থিতি কবে দেখা গিয়েছে তা পরিসংখ্যানবিদরাও মনে করতে পারছেন ধা। ১৫ বছর পরে ভারতের মাটিতে টেস্ট জিতল দক্ষিন আফ্রিকা। ১৩বছর পরে ইডেনে হারল ভারত। আড়াই দিনের মধ্যে ম্যাচের ফলাফল হয়ে গিয়েছে। গত সাতদিন ধরে ইডেনের পিচ নিয়ে প্রচুর শব্দ খরচ হয়েছে। প্রথম দুদিনে ঘূর্নিপাকে দুদলের ব্যাটাররা ঘোল খাচ্ছেন দেখে অনেকেই ইডেনের বাইশগজ টেস্ট ম্যাচের উপযোগী কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সৌরভ গাঙ্গুলী বলেছেন পছন্দের উইকেট ভারতীয় দলকে দেওয়া হয়েছিল। তাই রবিবাসরীয় দুপুরে ভারতের হারে অনেক নানা প্রশ্ন তুলেছেন। ভারতীয় ব্যাটারদের মানসিকতাও প্রশ্নের সামনে। ম্যাচ পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় ব্যাটারদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই গৌতম গম্ভীরও হতাশা গোপন করেননি। “ছয় ম্যাচে চারটি হার। এভাবে কাউকে তুলনা করা যায় না। দলটা এখনও তরুণ, অভিজ্ঞতা কম। মানসিক দৃঢ়তা দরকার। এখানে শ শুধু স্পিন নয়, আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটের চাপ সামলানোর ক্ষমতাও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ,”বলছেন ভারতীয় দলের হেডস্যার। ইডেনের পিচ নিয়ে গত কয়েকদিনে প্রচুর শব্দ খরচ হয়েছে। ম্যাচ শেষ হলেও পিচের চরিত্র নিয়ে কথা হয়েছে। গম্ভীর এই ক্ষেত্রে কাঠগড়ায় ইডেনের বাইশগজকে তুলতে নারাজ। বরং পছন্দ সই পিচ দেওয়া হয়েছে এবং কিউরেটরের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাহায্য পাওয়া গিয়েছে বলেই স্বীকার করেছেন। “উইকেটে কোনো দৈত্য ছিল না। এই পিচ একেবারেই খেলার অযোগ্য নয়। বাভুমা ও অক্ষর প্যাটে রান করেছে। লক্ষ্য করে দেখবেন এই পিচে স্পিনারদের চেয়ে পেসাররাই বেশি উইকেট পেয়েছে। যদি কেবলমাত্র স্পিন সহায়ক পিচ হত তাহলে পেসাররা এত উইকেট নিতে পারত না,” বলছেন গম্ভীর। প্রায় একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন,“এই পিচে পারফরম্যান্সের জন্য মানসিকতা ও দৃঢ়তা দরকার। অতিরিক্ত আক্রমণে গেলে হবে না। বল বুঝে খেলতে হবে। এরকম উইকেটে আমরা আগেও খেলেছি।”নিউজিল্যান্ডের পরে দক্ষিন আফ্রিকার স্পিনাররা ভারতীয় ব্যাটারদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। যা দেখলে অবাক হতে বই কি। বিষয়টি মেনে নিয়ে টিম ইণ্ডিয়ার হেডস্যার মানছেন,“স্পিন কীভাবে খেলতে হয় সেটা জানা জরুরি। আমি আগেও বলেছি—এই ধরনের চেয়েছিলাম। কিউরেটরও খুব সাহায্য করেছেন। স্পিন খেলতে না পারলে শিখতে হবে।আমরা যেরকম পিচ চেয়েছিলাম, ঠিক তেমনই পেয়েছি। কিন্তু ভালো না খেললে ফল এমনটাই হবে।” খুব ছোট রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে ভারতীয় ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেন। গুরুত্বপূর্ন সময়ে শক্তপোক্ত জুটি গড়ে ওঠা দরকার ছিল। বদলে প্রথম থেকে নিয়মিত উইকেট পড়েছে। ফলে জয়ের লক্ষ্য ছোট হলেও চাপ বেড়েছে। ১৪৯ মিনিট টিকে ছিল ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম উইকেট পড়ার পরই বড় ধাক্কা লেগেছিল। একটা পার্টনারশিপ দরকার ছিল। ধ্রুব জুরেল ও ওয়াশিংটন সুন্দর ভালো খেলেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশ্ন থেকেই যায়—আমাদের চাপ নেওয়ার ক্ষমতা আদৌ আছে কি? গম্ভীর বলছেন স্কিল রয়েছে বলেই এই স্তরে খেলার জন্য বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু মানসিক দৃঢ়তা না থাকলে বা গড়ে উঠলে সফল হওয়া কঠিন বলে মনে করেন। তবে পরাজয়ের জন্য কোনও একজন ব্যক্তি বিশেষকে কাঠগড়ায় তুলতে নারাজ গম্ভীর। তাঁর মতে,“আমরা দল হিসেবে হারি বা জিতি।আজ ম্যাচটা জিতে গেলে এত প্রশ্ন উঠতই না। দলের প্রতিটি ব্যক্তি এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী। “স্কিল, টেম্পারামেন্ট, সবই উন্নত করতে হবে। শট নির্বাচন আরও ভালো করতে হবে,” বলছেন গম্ভীর। প্রায় একই সঙ্গে যোগ করেছেন,“শুধু ব্যাটসম্যানকে দোষ দিলে চলবে না। ধৈর্য নিয়ে খেলতে হবে।যা আমাদের ব্যাটাররা করতে পারেনি। আমাদের এটা তাড়া করতেই হত। দ্বিতীয় ইনিংসে চাপ বাড়তেই থাকে, আর সেখানেই আমরা ম্যাচ থেকে বেরিয়ে যাই।”ইডেনের হারে সিরিজ হারের ভ্রুকুটি গুয়াহাটিতে থাকবে। ইডেনের পিচকে পছন্দের উইকেট বলছেন গম্ভীর। স্বাভাবিকভাবেই গুয়াহাটিতে একই পিচ চাইবে ভারতীয় দল,ধরে নেওয়া যায়। গম্ভীর এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে জানিয়েছেন,“ পিচ নিয়ে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। আমাদের মানসিক দৃঢ়তার উন্নতির দরকার। তাই ওখানকার পরিস্থিতিতে যা পাওয়া যাবে, সেখানে আমাদের আরও ভালো পারফর্ম করতে হবে।”ভারতীয় দল মঙ্গলবার থেকে ফের অনুশীলনে এবং তা ইডেনেই।
পিচ নয় ব্যর্থতা দলের মানসিকতায়, বলছেন গম্ভীর
















Leave a Reply